ক্লাসে বসে আছি। শিক্ষক আসবেন। হাতে বই- জার্নাল নিয়ে একজন ঢুকলেন। আমাদের কেউ না। ভাবলাম সিনিয়র কেউ। একটু খটকা লাগছে। দেখি অনেকেই উঠে দাঁড়িয়েছে। আমিও উঠে দাঁড়ালাম। একটু দেরী হয়ে গেল। তিনি আমাকে বললেন, “ এই তুমি উঠে দাঁড়াতে দেরি করলে কেন? বেরিয়ে যাও!” আমি মহা আনন্দে আমার ট্রেডমার্ক কালো চাদরখানা গলায় পেঁচিয়ে সবেধন নীলমনি একখানা খাতা নিয়ে ক্লাস থেকে বেরিয়ে এলাম।
কোন কথা না বলে বেরিয়ে আসার দু’টো কারণ ছিল। আমার অপরাধ এত গুরুতর ছিলনা, যাতে আমাকে ক্লাস থেকে তড়িয়ে দেবে। আরেকটা কারণ ছিল বিজনেস ফ্যাকাল্টির ক্যান্টিনে গেল একজন ফ্রি খিচুড়ী খাওয়াতো।
আমি সেখানে গিয়ে ফ্রি খিচুড়ী ও চা খেয়ে আসলাম।
এসে শুনি, আমি কোন কথা না বলে চলে যাওয়াতে স্যারের ইগোতে লেগেছে আরও বেশি। ওনি ক্লাসের অনেককেই etiquette বানান জিজ্ঞেস করেছেন। অনেকে পেরেছে, অনেকে পারেনি। এটিকেট নিয়ে ক্লাসে আলোচনাও করেছেন। যাবার আগে বলে গেছেন স্যারের রুমে গিয়ে যাতে দেখা করি। আমার এক বন্ধু জানতে চাইল আমি etiquette বানান পারি কিনা? আমি বললাম, “না” । সে আমাকে বানান মুখস্ত করালো আগে। তারপর বলল, “ এইবার গিয়ে ডলা খেয়ে আয়!”
আমি চিন্তা করলাম, ত্যাড়ামি করব, না ভদ্র ছেলে হয়ে থাকব। আমার মনোভাব বুঝতে পেরে বন্ধু বলল, ত্যাড়ামি করিস না।
এই বার স্যারের রুমের দিকে যাচ্ছি আর টেনশান বাড়ছে। যাই কিছু হউক উনি শিক্ষক। প্রথম দিনেই ঝামেলা হয়ে গেল। স্যারের রুমের দরজায় নক করে ঢুকার অনুমতি চাইলাম। স্যার ঢুকতে বলে জিজ্ঞাসু দৃষ্টিতে তাকিয়ে রইলেন!
- স্যার, আপনি দেখা করতে বলেছেন।
স্যারের চোখে ক্রোধ দেখলাম। রুমে স্যারের গেষ্ট ছিলেন। ভাল করে বকাও দিতে পারছেন না! এইটা বুঝে আমারা দারুণ মজা লাগছিল।
- ও! তুমি। আমি চলে যেতে বলার সাথে সাথে তুমি চলে যাবা! তোমার দুঃখ প্রকাশ করা
উচিত ছিল।
- জ্বি স্যার।
- ক্লাসের কিছু নিয়ম কানুন আছে, সেটাতো তোমাকে মেনে চলতে হবে।
- জ্বি স্যার।
- Etiquette জিনিসটা খুব গুরুত্বপূর্ণ।
- জ্বি স্যার।
- ক্লাস ফাঁকি দিবেনা।
- দিবনা স্যার।
- আজ কি আলোচনা হয়েছে সেটা জেনে নেবে।
- জ্বি স্যার।
- আগামীকাল আমার সাথে ক্লাস আছে?
- আছে স্যার।
- আচ্ছা এটিকেট বানানটা কি তুমি পার!!!