৪ অক্টোবর বিশ্ব প্রাণী দিবস। প্রাণীর অধিকার রক্ষা ও কল্যাণার্থে প্রতিবছর বিশ্বব্যাপী ৪ অক্টোবর পালিত হয় দিবসটি। প্রাণী হিসেবে তাদের যে বেঁচে থাকার অধিকার সে অধিকার নিশ্চিতে জনসচেতনতার উদ্দেশ্যে ১৯৩১ সালে ইতালির ফ্লোরেন্স শহরে পরিবেশ বিজ্ঞানীদের এক সম্মেলনে ৪ অক্টোবর বিশ্ব প্রাণী দিবস হিসেবে ঘোষণা করা হয়। প্রাণীকুলের সংকটাপন্ন প্রজাতিদের সবার দৃষ্টিগোচর করতে বিশ্ব প্রাণী দিবসের প্রচলন করা হয়। অথচ বারবারের মতই আমরা প্রাণীদের হত্যা, তাদের আবাস্থল ধ্বংস করে যাচ্ছি। নিয়মিত বন উজাড় করা হচ্ছে। প্রভাবশালীরা ক্ষমতার জোরে বন দখল করে প্রাণীর বাসস্থানের পরিবেশ নষ্ট করে দিচ্ছে। ২০০৪ সালে যেখানে ৪৪০ টি বাঘের সংখ্যা ছিল সুন্দরবনে ২০১৬ সালে এসে সে সংখ্যা দাঁড়ায় ১০৬ এ। লোভ আর হিংস্রতা বোঝাতে যে প্রাণীটির উদাহরণ দেওয়া হয়, সেটা হায়েনা। রাজশাহীর বরেন্দ্র এলাকার ঊষর লাল মাটিতে উনিশ শতকের শেষের দিকেও ঘুরে বেড়াত ধূসর হায়েনার দল। তবে এখন বরেন্দ্র তো বটেই, বাংলাদেশের কোথাও হায়েনা নেই। একসময় এ দেশে গন্ডারও ছিল। গত ১০০ বছরে বাংলাদেশ ভূখণ্ড থেকে চিরতরে হারিয়ে গেছে এমন ৩১ প্রজাতির বেশি প্রাণী। এখনি যদি আমরা প্রাণী রক্ষায় এগিয়ে না আসি তবে অদূর ভবিষ্যতে দেশের জাতীয় পশু বাঘ শূন্য হয়ে পড়বে। সেই সাথে ক্রমশই কমছে হাতির সংখ্যা থেকে শুরু বহু প্রজাতির বন্য প্রাণীর সংখ্যা। বাংলাদেশের ১ হাজার ৬১৯ প্রজাতির বন্য প্রাণীর কোনটির কী অবস্থা, সে-বিষয়ক লাল তালিকা বা রেড লিস্টের হালনাগাদ প্রতিবেদন তৈরি করা হয়েছে। এটি যৌথভাবে তৈরি করেছে সরকারের বন বিভাগ এবং প্রকৃতি সংরক্ষণ-বিষয়ক আন্তর্জাতিক সংস্থা ইন্টারন্যাশনাল ইউনিয়ন ফর কনজারভেশন অব নেচার (আইইউসিএন)। যেটি প্রকাশ হয় ১৫ বছর পর পর।
২০১২ সালের বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ আইন অনুযায়ী বাঘ ও হাতি হত্যায় সর্বোচ্চ শাস্তি সাত বছরের কারাদণ্ড এবং ১০ লাখ টাকা জরিমানা ধার্য করা হয়েছে৷ কিন্তু তারপরও বাঘ থেকে শুরু বন্যপ্রাণী মারার ঘটনা ঘটে চলেছে বাংলাদেশে৷ তার ওপর আছে চোরাকারবারিদের উপদ্রব৷ তাই বনের প্রাণী রক্ষায় সচেতনতার বিকল্প নেই৷