শীতের ভোরে কুয়াশার চাদরে
ঢাকা থাকে চারিদিক,
সোনা ঝরা রোদের ঝলকে
শিশির কণা করে ঝিকমিক।

ঘরের বাহিরে যেতে নাহি
কারো মনে চায়,
জানালার ফাঁকে এক চিলতে
রোদ্দুর ডাকে আয়।

ভালো লাগে উঠোনে বসে
মিষ্টি রোদ্দুরের উষ্ণতা,
শিশু যেমনি ভালোবাসে
মায়ের স্নেহ মমতা।

গাঁয়ের ঐ মেঠো পথে
খেজুর গাছের সারি,
বৃক্ষপানে তাকালে দেখা যায়
গাছে বাঁধা রঙিন হাঁড়ি।

খেজুর রসের মিষ্টি পায়েস
খেতে ভালো লাগে,
উঠোনে সবাই বসে আছে
কে খাবে সবার আগে?

খেজুর গুড়ের মিষ্টি মধুর
পাটিসাপটা আর দুধ পুলি,
মায়ের হাতের পিঠের স্বাদ
কখনো যাবোনা ভুলি।

গরম ভাতে আলু বেগুন ভর্তা
সাথে একটু গাওয়া ঘি,
মটর শাকে শুকনো মরিচ
ভুলতে পারবো কী?

দিগন্ত জুড়ে সরষে ফুলে
সাজানো এক সুন্দর ছবি,
বাংলা মায়ের রুপের মাধুরী
কবিতায় লিখেছেন কতো কবি।

বাগান জুড়ে ডালিয়া, জিনিয়া
চন্দ্রমল্লিকা আর কৃষ্ণকলি,
গাঁদা আর সূর্যমূখীর হাসিতে
ছুটে আসে সব অলি।

শীতকালে ফুলের মেলায়
অলিদের নিত্য আনাগোনা,
মধু আহরণে ব্যস্ত তারা
এটাই প্রকৃতির চিরচেনা।

রসে ভরা কমলালেবু
ডালিম, ছফেদা আর জলপাই,
কাঁচা পাকা কুল বরই
আর আমলকিতে ভিটামিন সি পাই।

লাউ, শিম,মূলা,গাজর,
টমেটো, বেগুন, বাঁধাকপি,
লালশাক, পালংশাক, ধনিয়াপাতা
আর মাছের ঝোলে ফুলকপি।

বরফের দেশ ছেড়ে বাংলাদেশে
আসে কতো অতিথি পাখি,
তাদের জন্য এদেশ অভয়ারণ্য
যত্নে তাদের রাখি।

পৌষে বাংলার গাঁয়ে গাঁয়ে
হয় পৌষ পার্বনের মেলা,
বাহারি সব মিষ্টি খাবার
বায়োস্কোপ আর নাগরদোলা।

মনে পড়ে আজ
ফেলে আসা দিনগুলি,
মিষ্টি মধুর শীতের আমেজ
কি করে যাবো ভুলি?

লেখকঃ  আজিজুন নাহার আঁখি