হাতে লেখা আবেদনপত্র, কম্পিউটার কম্পোজ  করে প্রিন্ট আউট করা আবেদনপত্র, কোম্পানির ওয়েবসাইটে আবেদনপত্র, জব পোর্টালে আবেদনপত্র ইত্যাদির পাশাপাশি ই-মেইল করে আবেদনপত্র পাঠানোর প্রয়োজনীয়তা দিন দিন বেড়ে চলছে।

চাকুরির আবেদন একটি আনুষ্ঠানিক প্রক্রিয়া। সব ধরনের আবেদনপত্র পাঠানোর জন্য নির্দিষ্ট কিছু নিয়মকানুন মেনে চলতে হয়।

ই-মেইলে আবেদনপত্রও তার ব্যতিক্রম নয়। ই-মেইলে আবেদনপত্র পাঠানোর চল শুরু হয়েছে বেশি দিন হয়নি। তাই এই বিষয়ে আমাদের অনেকের জানাটা ভাসা ভাসা। ভাসা ভাসা জ্ঞান দিয়ে কি চাকুরির আবেদন করা যায়? করা যায় অবশ্যই। তবে তা বোকামিরই নামান্তর।  

অপেশাদারিত্ব, অযত্ম, অলসতা অন্য চাকুরির আবেদনপত্রের মত ই-মেইল আবেদনপত্রেও  কোন ভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। 

ই-মেইল পাঠানো সহজ বলে ই-মেইলে আবেদনকারীর সংখ্যাও বেশি। এই বেশি সংখ্যক আবেদনকারীর ভীড়ে নিজের আবেদনপত্রটি সংক্ষিপ্ত তালিকায় রাখার সমস্ত কৌশল আপনাকেই অবলম্বন করতে হবে। 

ই-মেইলে আবেদন করার জন্য কাভার  লেটার ও  সিভি পাঠাতে গেলে আমাদের মনে অনেক  ভাবনা আসে।

ই-মেইলের সাবজেক্টে কি লিখব? ই-মেইলের সাবজেক্টে লিখলে আবার কভার লেটারের বডিতে সাবজেক্ট লিখতে হবে কিনা? ই-মেইলের সাবজেক্ট কীভাবে লিখব? সিভিতে দেওয়া ই-মেইল থেকেই কি কভার লেটার ও সিভি পাঠাবো? কভার লেটার নাম কীভাবে হবে? ফাইল কি পিডিএফ হবে, না  মাইক্রোসফট ওয়ার্ড হবে?

কভার লেটার ও সিভি কি ই-মেইল বডিতে কপি করে পেষ্ট করবো, না এটাচম্যান্ট হিসেবে দিব? কভার লেটার এটাচম্যান্ট হিসেবে দিলে ই-মেইল বডিতে কি লিখতে হবে?

ই-মেইল কি নির্দিষ্ট কারো নামে করতে হবে? ই-মেইলে কি সিগনেচার দিতে হয়? হলে, কীভাবে দিতে হয়? ই-মেইল বডির লেখাটা কীভাবে লিখতে হবে?

ই-মেইল কি নির্দিষ্ট কারো নামে করতে হবে? ই-মেইলে কি সিগনেচার দিতে হয়? হলে, কীভাবে দিতে হয়? ই-মেইল বডির লেখাটা কীভাবে লিখতে হবে?

ই-মেইল আইডিঃ

প্রথমে আপনার ই-মেইল এড্রেস প্রাতিষ্ঠানিক ব্যবহারের জন্য যথার্থ হতে হবে। আপনার নাম থাকাটা জরুরি। জেমস বন্ড, এসআরকে, ভেগাবন্ড, নীল পরি নীলাঞ্জনা – এ জাতীয় ই-মেইল অবশ্যই ব্যবহার করা যাবেনা।

সিভিতে যে ই-মেইল দিয়েছেন, সেই ই-মেইল থেকেই চাকুরির আবেদন করবেন।  

সাবজেক্ট লাইনঃ

ই-মেইলের সাবজেক্ট লাইন খুবই গুরুত্বপূর্ণ। নিয়োগ ব্যাবস্থাপক অসংখ্য ই-মেইল পান। ই-মেইল সাবজেক্টের শব্দচয়ন ঠিক না থাকলে, সেই ই-মেইল খুলে দেখার সম্ভাবনা কমে যায় অনেকাংশে।

সাবজেক্টে যে পদের জন্য আবেদন করছেন, সে পদের নাম ও টাইটেল দেবেন। বিজ্ঞপ্তির কোন রেফারেন্স নাম্বার থাকলে সেটাও দিতে হবে।

সাবজেক্ট লাইন লেখার পর ই-মেইলের বডিতে আবার সাবজেক্ট লেখার প্রয়োজন নেই।

কভার লেটার ও সিভি ফাইলের নামকরণঃ

কভার লেটার ও সিভি ফাইলের নামকরণের দিকে আমাদের অনেক সময় কোন খেয়াল থাকেনা। আমরা বিভিন্ন নামে সিভি ও কভার লেটার এটাচ করে পাঠিয়ে দেই। নিয়োগ ব্যবস্থাপক এই ফাইলগুলো সেইভ করেন, কিন্তু পরবর্তীতে তার এই ফাইলগুলো খুঁজে পেতে খুব সমস্যা হয়। আমাদের কাজ হচ্ছে তার কাজকে সহজ করে দেওয়া, যা আমাদের আবেদনে পেশাদারিত্বের ছাপ নিয়ে আসে।

কভার লেটারের ফাইলের নাম যেভাবে হতে পারেঃ

১) আপনার নাম – আপনার পেশা – কভার লেটার

২) আপনার নাম­_আপনার পেশা_কভার লেটার

সিভি বা রেজুমির ফাইলের নাম যেভাবে হতে পারেঃ

১) আপনার নাম – আপনার পেশা – সিভি  

২) আপনার নাম­_আপনার পেশা_সিভি

কভার লেটার ও সিভির ফাইল ফরমেটঃ

চাকুরির বিজ্ঞপ্তিতে কোন কিছু উল্লেখ্য করা না থাকলে পিডিএফ ফরমেটে কভার লেটার ও সিভি পাঠানো ভাল। এলাইনমেন্ট  নষ্ট হওয়া বা ফন্টের ঝামেলার ভয় থাকেনা। কিন্তু ওয়ার্ডে চাইলে আপনাকে ওয়ার্ডেই কভার লেটার ও সিভি পাঠাতে হবে।

অন্যান্যঃ

যিনি বিজ্ঞপ্তি দিয়েছেন তার নামে কভার লেটার ও সিভি পাঠাতে পারলে সবচেয়ে ভাল হয়। নাম একেবারেই না পেলে পদবি দিয়ে সম্বোধন করে ই-মেইল শুরু করবেন।

ই-মেইলের প্রথম প্যারায় লিখবেন আপনি কে এবং কেন আপনি তাদের সাথে যোগাযোগ করছেন।

দ্বিতীয় প্যারায় লিখুন আপনি প্রতিষ্ঠানে কি অবদান রাখতে পারবেন।

শেষ প্যারায় আপনি সাক্ষাৎকার দিতে আগ্রহী এটা বুঝিয়ে শেষ করবেন।

লেখাকে  বড় করবেননা। লেখা ছোট কিন্তু আকর্ষণীয় হতে হবে। 

আপনার ই-মেইল স্বাক্ষর স্বতন্ত্র ও পেশাদার হতে হবে। এর সাথে দিবেন আপনার সাথে যোগাযোগের ঠিকানা।  

ই-মেইল বার বার পড়ে দেখবেন। 

অবশেষে কভার লেটার ও সিভি এটাচ করতে ভুলবেন না।

অনেক ক্ষেত্রে ই-মেইলেই কভার লেটার চায়। সেক্ষেত্রে ই-মেইলে কভার লেটার লিখে সিভি এটাচ করে দিবেন। সবকিছু শেষ করে সেন্ড বাটনে প্রেস করে পাঠিয়ে দিন আপনার কভার লেটার ও সিভি।

সিভি তৈরির বিস্তারিত জানতে পড়তে পারেন “সিভি ও রেজুমি তৈরির উপায়”

কভার লেটার লেখা জানতে পড়ুন “কভার লেটার লেখার উপায়”

সিভি লিখে দেবার বিজ্ঞাপন দেখে বিভ্রান্ত না হবার জন্য পড়তে পারেন সিভি তৈরির বিজ্ঞাপন ও বাস্তবতা”