🔰 ভালোবাসা নাকি বাহ্যিকতা :

  1. আমাদের সমাজে এমন অনেকে রয়েছেন যারা মানুষের বাহ্যিক বিষয়গুলোকেই বেশি প্রাধান্য দিয়ে থাকে। এই বাহ্যিক বিষয়গুলোর মধ্যে কী কী বিষয়সমূহ অন্তর্ভূক্ত সেটাই এখন বিবেচ্য বিষয়। তারা মনে করে যারা বেশি টাকা-পয়সা আছে, যারা যত বেশি ধন-দৌলত রয়েছে সেই ব্যক্তি তত বেশি সম্মান পাওয়ার যোগ্যতা রাখে। কাছে ভালবাসার কোনো মূল্যায়ন নেই। তারা মনে করে টাকা পয়সা, অর্থ বিত্তই মানুষকে সুখ দিতে পারে। তাই তারা টাকাপয়সার দিকেই বেশি ধাবিত হয়।

আমি সম্পূর্ণভাবে এটা বলবনা যে টাকা পয়সা সুখ দিতে পারেনা। জীবনে বেচেঁ থাকতে হলে, সুন্দরভাবে জীবনকে পরিচালনা করার জন্য অর্থ, টাকাপয়সার দরকার রয়েছে কিন্তু শুধুমাত্র টাকাপয়সা কখনো মানুষকে সম্পূর্ণভাবে সুখ দিতে পারেনা, আত্মিক কোনো প্রশান্তি এনে দিতে পারেনা। টাকাপয়সা শুধুমাত্রই মানুষকে সাময়িক সুখ এনে দিতে পারলেও স্থায়ী সুখ কখনোই এনে দিতে পারেনা।

একটি নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত অর্থের উপর মোহ থাকলেও জীবনের একটি পর্যায়ে এসে এসব বাহ্যিক বিষয়গুলো অসার, মূল্যহীন মনে হবে। তখন মানুষ চাইবে শুধুমাত্র একটুখানি শান্তি, একটুখানি ভালোবাসা, স্নেহ, প্রিয় মানুষগুলোর সাহচর্য, প্রিয় মানুষগুলোর ভালবাসা। তখন তার নিকট এগুলোই বেশি প্রাধান্য পায়। এগুলোই মুখ্য হয়ে ওঠে তখন।

যদি অর্থই এই পৃথিবীর সবকিছু হতো তাহলে হয়তো সমাজে গরীব মানুষেরা এভাবে শান্তিতে নিশ্চিন্তে বেচেঁ থাকতে পারতো না। যদি অর্থই সবকিছু হতো তাহলে হয়তো কোনো ধনী ব্যক্তি আর আত্মহত্যাই করতো না।

এই পৃথিবীতে যার যত বেশি আছে সে আরো বেশী করে পেতে চায়। যার ৯৯৯ টাকা আছে সে ১০০০ টাকা বানানোর জন্য মরিয়া হয়ে ওঠে আর তখন সে সেই এক টাকার জন্য যেকোনো কিছু করতে পারে। অথচ এই এক টাকা না হলে তার তেমন কিছুই ক্ষতি হবেনা। আর ওই এক টাকা তার সুখ শান্তি সবকিছুই কেড়ে নেয়। দিনশেষে শুধুমাত্র ভালোবাসাটাই পড়ে থাকে। প্রিয় মানুষগুলোর সাহচর্যই মুখ্য ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়।

তাই আমার অভিজ্ঞতা বলে, এই জীবনে টাকাপয়সার পেছনে, নিছক মায়ার পেছনে না ছুটে ভালোবাসার পেছনে ছুটতে হবে। প্রিয় মানুষগুলোকে আকড়ে ধরে বাঁচতে হবে যারা কিনা আমাদেরকে সত্যিকারের ভালবাসে, আমাদের দুঃখের সময়ে আমাদের পাশে থাকে। আর যার যতটুকু রয়েছে, সৃষ্টিকর্তা যাকে যতটুকু দিয়েছে সেটি নিয়েই সুখে থাকতে হবে। বেশি লোভ করতে গেলে বর্তমানের সবকিছুও খোয়াতে হবে এটা মাথায় রেখে জীবন চালালেই জীবন হয়ে উঠবে সুখী এবং স্বাচ্ছন্দময়।