ধরনীতে আসলাম যখন, বাবা প্রতিবেশীকে বলেছিলো হেসে,,

শুনেছ জহির, এবারো ছেলে হয়েছে মিষ্টিমুখ করো এসে।।

কদ্দিন পর হতাশ হয়ে মা বলেছিলো শেষে,,

তিন ছেলের পর এবার মেয়ে হলেই খুশি হতাম কিযে।।

বয়স যখন তিন কিংবা চার, ওড়না চুড়ি আর লিপস্টিক দিয়ে বউ বানিয়ে, মা বলতো চেয়ে,,

বুঝেছিস মিহির, যে যাই বলুক তুই আমার মেয়ে।।

বয়স বাড়ে আমিও বাড়ি, শরীর পায় রুপ,,

মা দেখে আর কাঁদে বাকিরা সবাই নিশ্চুপ।।

মা বলে এসব খেলা খেলেনা বাবা, ক্রিকেট খেল গিয়ে,,

আমি বলি ব্যাট বল আমার ভালো লাগেনা,

আমি দিবো আমার পুতুলের বিয়ে।।

কন্ঠে থাকে নারীর ছোঁয়া আর হাঁটিতে কোমর দুলে,,

খুড়ীমা বলে, ইশ্বর পাপ দিয়েছে পূর্বজন্মের ভুলে।।

বাবা মারে আমায় আর দাদারা বকে, বলে বাসায় থাক,,

দিদা বলে দূরে মর গিয়ে, মরলেই বাঁচা যাক।।

বাহিরে চললাম নদীর তীরে, দিবো জলে ঝাঁপ

আগন্তুক আসিলেন, বলিলেন আমায়,

অর্ধনারীশ্বর তুমি, ইশ্বরের আশির্বাদ তুমি কি চাও বাছা, জীবন তোমার এমনি বৃথা যাক?

আমি বললাম, ধর্ম বলে অভিশাপ আমায়,

সমাজ বলে বোঝা,,

মন বলে সত্ত্বা আমায়, আমি বলি সাজা।।

আগন্তুক বলে, ভেব নাকো বোঝা তোমায়, ভেবো নাকো সাজা এ জীবন, শুধু ধরো একটু ধৈর্য,,

ওপারে সুখ পাবে তুমি পাহিবে এক স্বর্গ।।

হঠাৎ দমকা হাওয়ার আগন্তুক মিলিয়া যায়,,

আমি ভাবি এ জীবন আমার ইশ্বরের আশির্বাদ,

তা কেনো অকালে নষ্ট করিব হায়?

 

লেখকঃ শাহরুখ আহম্মেদ