প্রথমেই বলি নকশী কাঁথা নিয়ে আমাদের পল্লীকবি জসীম উদ্দীনের বিখ্যাত কাব্যগ্রন্থ ‘’ নকশীকাঁথার মাঠ” রচিত হয়েছে রুপাই আর সাজুর প্রেম গাঁথা নিয়ে। এই কাব্যে সাজু কাথাঁর মাধ্যমে সুঁই সূতা দিয়ে ফুটিয়ে তুলেছেন তাদের প্রেমগাঁথা । অপূর্ব সেই কাব্যগ্রন্থে কবি আমাদের ঐতিহ্যকে সুন্দরভাবে উপস্থাপন করেছেন ।এক সময় গ্রামের মেয়েরা তাদের অলস সময়ে তাদের সুখ, দুঃখ ,তাদের জীবনের কাহিনী গুলো ফুটিয়ে তুলতেন নকশী কাঁথার মাধ্যমে।সাধারনত বর্ষাকালে অলস সময়টুকুতে গ্রামের মেয়েরা কাঁথা ফোড়ের কাজ করতেন ।এই কাঁথা সবার প্রথমে তৈরী হয় ব্রিটিশ আমলে ।২০০৮ সালে ভারতের প শ্চিমবঙ্গ রাজ্য নকশী কাঁথার ভৌগলিক স্বীকৃতি পায় ।
নকশি কাথাঁ হলো সাধারনত কাথাঁয় নানা ধরনের নকশা করে বানানো বিশেষ প্রকারের কাথাঁ । নকশী কাথাঁর ঐতিহ্য শত শত বছরের পুরনো। যা ভারতের পশ্চিমবঙ্গ ও বাংলাদেশের সংস্কৃতির একটা অংশ ।
পুরো বাংলাদেশেই নকশি কাথাঁ তৈরী হয় তবে ময়মনসিংহ, রাজশাহী, ফরিদপুর ও যশোর নকশী কাথাঁর জন্য বিখ্যাত ।
উপাদানঃ প্রধানত সুতির কাপড় , সূচঁ ও রঙিন সূতো।
নকশী কাথাঁর দামটা নির্ভর করে তৈরীর উপর ,সূতার উপর,সময়ের উপর এবং কাজের জাঁকজমকের উপর , তাই একটা নকশী কাথাঁ করতে প্রায় ২-৩/৪-৫ মাস সময় লেগে যায় । এমনকি এক একটি কাঁথা সেলাই করতে এক বছর এর মত সময় লেগে যেতে পারে। নকশী কাঁথা আগের দিনে নতুন জামাই বা নতুন নাত বৌকে উপহার হিসেবে দেওয়া্র জন্য নানী দাদীরা তৈরী করতেন ।
এই কাঁথাটা অনেকভাবে ব্যবহৃত হয়ে থাকে । বাচ্চার কাঁথা হিসেবে, ঠান্ডা নিবারক হিসেবে, দস্তর খানা হিসেবে, জায়নামাজ, গিলাফ হিসেবে ব্যবহৃত হয়ে থাকে ।

অন্যান্য লোকশিল্পের মতো নকশী কাঁথাও একটি শিল্প । এই কাঁথার উপর দৈনন্দিন ব্যবর্হায জিনিস , আবহাওয়া, পরিবেশ ও অর্থনীতির প্রভাব আছে। সম্ভবত প্রথমদিকে কাঁথা ছিল জোড়াতালি দেওয়া কাপড় । পরবর্তীতে এটি থেকেই নকশী কাঁথার প্রচলন । অনেক ধরনের নকশা হয়ে থাকে একটি কাঁথা সেলাইয়ে যেমনঃ চলমান সেলাই, লহরী কাঁথা , আনারসি, বাঁকা সেলাই, সুজনী কাঁথা,ইত্যাদি ।
নকশী কাঁথার বিভিন্ন রকমের ব্যবহৃত জিনিস যেমন বেডশীট, নকশী কাঁথা পেতে পারেন
রকমারি আয়োজন পেইজে